Dhaka 7:04 am, Monday, 17 November 2025

তারাগঞ্জে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চালু রইল হক ব্রিকস ইটভাটা

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:52:33 pm, Monday, 27 October 2025
  • 56 Time View

শফিউল মন্ডল,তারাগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধি:

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের এইচবিএল-২ (হক ব্রিকস) ইটভাটাটি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা ও সরকারি আদেশ অমান্য করে এখনো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকায় বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে স্থানীয় শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ শ্বাসকষ্ট, ত্বকের রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, ভাটার ধোঁয়ার প্রভাবে ফসলের উৎপাদন কমে গেছে, গাছের ফুল-ফল ঝরে পড়ছে এবং কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় ভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

২৭ অক্টোবর দাখিল করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির ওপর অনুমোদনবিহীনভাবে ইটভাটা স্থাপন করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে মেসার্স হক ব্রিকস (এইচবিএল-২) কে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়। অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, ভাটার কার্যক্রম বন্ধ না করলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মধুপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাবের আলীর ছত্রছায়ায় ভাটার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। জাবের আলী স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ও তার ছেলে রেজওয়ানুল হক রঞ্জু ভাটার ম্যানেজার ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি।

পাতাইটারি গ্রামের এক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারের কোনো নিয়ম-নীতি মানছে না ভাটার মালিকরা। ধোঁয়ার কারণে আমাদের শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে, ফসল ফলছে না, গাছের ফল ঝরে যাচ্ছে।”

 

ইটভাটার ম্যানেজার রেজওয়ানুল হক রঞ্জু বলেন,
ভাটার মালিক চালাতে বলেছেন, তাই চালাচ্ছি। আমি কিছু জানি না, মালিকের সঙ্গে কথা বলুন।”

 

হারিয়ারকুঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা জব্বার হোসেন বলেন, “ইটভাটার কারণে কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ধূলা ও ধোঁয়ার কারণে এলাকার বায়ুদূষণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

উজিয়াল আফানের পাড়া গ্রামের জাদু মিয়া বলেন, “কাগজে ভাটা বন্ধ দেখালেও বাস্তবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসন যদি বন্ধ করে দেয়, আমরা অনেক উপকৃত হবো।”

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভাটার কার্যক্রম চালু থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Tag :
Popular Post

তারাগঞ্জে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চালু রইল হক ব্রিকস ইটভাটা

Update Time : 05:52:33 pm, Monday, 27 October 2025

শফিউল মন্ডল,তারাগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধি:

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের এইচবিএল-২ (হক ব্রিকস) ইটভাটাটি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা ও সরকারি আদেশ অমান্য করে এখনো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকায় বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে স্থানীয় শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ শ্বাসকষ্ট, ত্বকের রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, ভাটার ধোঁয়ার প্রভাবে ফসলের উৎপাদন কমে গেছে, গাছের ফুল-ফল ঝরে পড়ছে এবং কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় ভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

২৭ অক্টোবর দাখিল করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির ওপর অনুমোদনবিহীনভাবে ইটভাটা স্থাপন করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে মেসার্স হক ব্রিকস (এইচবিএল-২) কে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়। অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, ভাটার কার্যক্রম বন্ধ না করলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মধুপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাবের আলীর ছত্রছায়ায় ভাটার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। জাবের আলী স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ও তার ছেলে রেজওয়ানুল হক রঞ্জু ভাটার ম্যানেজার ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি।

পাতাইটারি গ্রামের এক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারের কোনো নিয়ম-নীতি মানছে না ভাটার মালিকরা। ধোঁয়ার কারণে আমাদের শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে, ফসল ফলছে না, গাছের ফল ঝরে যাচ্ছে।”

 

ইটভাটার ম্যানেজার রেজওয়ানুল হক রঞ্জু বলেন,
ভাটার মালিক চালাতে বলেছেন, তাই চালাচ্ছি। আমি কিছু জানি না, মালিকের সঙ্গে কথা বলুন।”

 

হারিয়ারকুঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা জব্বার হোসেন বলেন, “ইটভাটার কারণে কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ধূলা ও ধোঁয়ার কারণে এলাকার বায়ুদূষণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

উজিয়াল আফানের পাড়া গ্রামের জাদু মিয়া বলেন, “কাগজে ভাটা বন্ধ দেখালেও বাস্তবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসন যদি বন্ধ করে দেয়, আমরা অনেক উপকৃত হবো।”

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভাটার কার্যক্রম চালু থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”