Dhaka 5:55 am, Monday, 17 November 2025

পূজামণ্ডপে সংগীত বিতর্কে আটক ২, পরিচয় নিয়ে যা জানালো পুলিশ

চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় শহীদুল ইসলাম ও নুরুল করিম নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত দুজনই মাদরাসার শিক্ষক।

 

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিএমপির ডিসি মিডিয়া রইছ উদ্দিন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তারা কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে এই সংগীত পরিবেশন করেছে কিনা। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, এই সঙ্গীত পরিবেশনের কারণে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার বিষয়টি রয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। যিনি তাদের গান গাইতে ডেকেছেন, পূজা কমিটির সেই নেতা সজল দত্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত হচ্ছে।

 

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে নগরীর জে এম সেন হলে পূজামণ্ডপে সংগীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির কয়েকজন শিল্পী। তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। তবে এর একটি ইসলামী সংগীতের কয়েককটি লাইন নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

 

এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় মন্ডপ কমিটির দু’পক্ষের। ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আটকের আশ্বাস দিয়েছেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। তার মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ৩ মিনিটের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ছয়জন তরুণ মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন। এ সময় তারা একটি ইসলামি সংগীত পরিবেশন করছেন। আশপাশে উপস্থিত কয়েকজনকে সেটি মুঠোফোনে ধারণ করতে দেখা যায়।

 

কালচারাল একাডেমির দাবি, পূজা কমিটির সম্মতিতেই মঞ্চে উঠেছিলেন। তবে পূজা কমিটি বলছে তারা আমন্ত্রিত ছিলেন না। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান জানান, পূজা উদ্‌যাপন কমিটির আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।

Popular Post

পূজামণ্ডপে সংগীত বিতর্কে আটক ২, পরিচয় নিয়ে যা জানালো পুলিশ

Update Time : 06:27:25 pm, Friday, 11 October 2024

চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় শহীদুল ইসলাম ও নুরুল করিম নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত দুজনই মাদরাসার শিক্ষক।

 

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিএমপির ডিসি মিডিয়া রইছ উদ্দিন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তারা কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে এই সংগীত পরিবেশন করেছে কিনা। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, এই সঙ্গীত পরিবেশনের কারণে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার বিষয়টি রয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। যিনি তাদের গান গাইতে ডেকেছেন, পূজা কমিটির সেই নেতা সজল দত্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত হচ্ছে।

 

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে নগরীর জে এম সেন হলে পূজামণ্ডপে সংগীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির কয়েকজন শিল্পী। তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। তবে এর একটি ইসলামী সংগীতের কয়েককটি লাইন নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

 

এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় মন্ডপ কমিটির দু’পক্ষের। ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আটকের আশ্বাস দিয়েছেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। তার মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ৩ মিনিটের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ছয়জন তরুণ মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন। এ সময় তারা একটি ইসলামি সংগীত পরিবেশন করছেন। আশপাশে উপস্থিত কয়েকজনকে সেটি মুঠোফোনে ধারণ করতে দেখা যায়।

 

কালচারাল একাডেমির দাবি, পূজা কমিটির সম্মতিতেই মঞ্চে উঠেছিলেন। তবে পূজা কমিটি বলছে তারা আমন্ত্রিত ছিলেন না। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান জানান, পূজা উদ্‌যাপন কমিটির আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।