
রংপুর সদরের মমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে-১ প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে ভাঙা বেঞ্চ, পলেস্তারা খসে পড়া দেয়াল আর অপরিষ্কার মাঠ। শিক্ষার্থীরা অস্বস্তিকর পরিবেশে ক্লাস করছে, অথচ গত দুই অর্থবছরে স্কুলে সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ এসেছে কয়েক লাখ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, সেই টাকা খরচ না করে ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩–২৪ ও ২০২৪–২৫ অর্থবছরে অস্থায়ী গৃহনির্মাণে ৩ লাখ, ক্ষুদ্র মেরামতে ২ লাখ এবং কয়েক ধাপে স্লিপ বাবদ বরাদ্দ আসে। কিন্তু বরাদ্দের টাকা দিয়ে কাজ না করে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়া বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ তিনটি ল্যাপটপও স্কুলে ব্যবহার না করে নিজের বাসায় রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সহকর্মীরা।
শিক্ষকরা বলছেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বললেই গালিগালাজ ও হুমকির মুখে পড়তে হয়। সহকারী শিক্ষিকা শাহিদা আক্তার বলেন, ‘বরাদ্দ আসলেও সংস্কার হয় না। হ্যান্ড ওয়াশ, সাবান কিছুই নেই। বেঞ্চ ভাঙা, মাঠ নোংরা। অথচ গত এক বছরে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তোলা হয়েছে।’
সহকারী শিক্ষক শাহজাহান আলী জানান, ব্যাংক স্টেটমেন্টে টাকা তোলার প্রমাণ আছে, কিন্তু স্কুলে কোনো সংস্কার হয়নি। প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিলরুবা আফরোজ বলেন, ‘স্কুলের ল্যাপটপ তিনি বাসায় নিয়ে গেছেন। ফলে অফিসের কাজ বাইরে গিয়ে করতে হয়।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার দাবি করেন, তিনি বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ করেছেন এবং বিল-ভাউচার জমা দিয়েছেন। তবে কমিটির মাধ্যমে কাজ করার প্রশ্নে তিনি কোনো জবাব দেননি।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে, প্রতিবেদন জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুসন্ধানী সংবাদ ডেস্ক নিউজ 












