
শফিউল মণ্ডল, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি :
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের বড়বাড়ি এলাকায় বাবার কবর জিয়ারত করতে গিয়ে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন আব্দুল খালেক (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। শুক্রবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবর জিয়ারতের সময় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত আব্দুল খালেক নিয়মিতভাবে প্রতি শুক্রবার বাবার কবর জিয়ারত করতেন। ঘটনার দিন কবর জিয়ারতের সময় তিনি দেখতে পান, কেউ তার বাবার কবরের পাশে মাটি খুঁড়ে নিয়ে গেছে। এতে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করলে প্রতিবেশী লাবু মিয়া, বাবু মিয়া, চাঁন মিয়া ও দুলাল মিয়া দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে তার ওপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা আব্দুল খালেককে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং বাবু মিয়া খন্তি জাতীয় অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার চিৎকারে বড় ভাই আব্দুস সালেক ও মহুবুল এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে আব্দুল খালেক মারা যান।
নিহতের পরিবার জানায়, আব্দুল খালেকের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন এবং হামলাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন।
এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী। স্থানীয় ডাঙ্গীরহাট এলাকায় হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম মাস্টার বলেন,আমাদের এলাকায় এমন নৃশংস ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। আমরা সবাই হতবাক। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।
হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আমির আলী বলেন,নিহত খালেক একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। তিনি নিয়মিত কবর জিয়ারতে আসতেন। কবরের পাশে মাটি নেওয়াকে কেন্দ্র করে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তার দুই ভাইও আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নুরন্নাহার নামে এক দোকানদার জানান,আমি দোকান খোলার পর দেখি বাবু ও লাবু খালেককে মাটিতে ফেলে পেটাচ্ছে। বাবু খন্তি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
রংপুরের এএসপি(এ সার্কেল)সঞ্জিত কুমার সরকার বলেন,ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নেয় সে বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে।”
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পোস্টমর্টেম শেষে নিহতের মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হলে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
Reporter Name 











